তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে ৬ ইউনিয়ন

0

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে নদীর তীরবর্তী ৬টি ইউনিয়নের বিশাল এলাকা। পানিতে আটকা পড়েছে প্রায় দুই হাজার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, গত ৭ দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে হরিপুর, কাপাসিয়া, বেলকা, তারাপুর, শ্রীপুর ও কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। ওই সব ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার মানুষ পানিতে আটকা পড়েছে। গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি নিয়েও জলাবদ্ধতার মুখে পড়েছেন মানুষ। বিশুদ্ধ পানি ও পানির তীব্র সংকটে রান্নার কোনো শুকনো উঁচু জায়গা না থাকায় তারা অর্ধাহারে-অনাহারে জীবনযাপন করছে। বাসা বাঁধার জন্য উঁচু জমি না থাকায় এবং গবাদি পশুর চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় পশু পাখিদের বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া আমন বিজতলা ও বেড়ে ওঠা তোষা পাট ক্ষেত পানির নিচে চলে যাওয়ায় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন ১২ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া তাদের বড় সম্পদ গবাদিপশু নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন তারা। তাদের খাদ্য চাহিদা মেটাতে ত্রাণ সামগ্রী এখনও পাওয়া যায়নি। আমরা জরুরী ভিত্তিতে এই সমস্ত জলাবদ্ধ মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।

কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া জানান, তার ইউনিয়নের এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে। পানিতে আটকা পড়েছে ৬ হাজার মানুষ। নৌকা ও ভেলা ছাড়া তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ দেখা যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে দ্রুত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা দরকার।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কিছু শুকনো খাবার ও নগদ তিন লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যানদের তথ্যের ভিত্তিতে পর্যাপ্ত ত্রাণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতিদিন দুস্থ মানুষের খোঁজ খবর রাখছি। আশা করছি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা সম্ভব হবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি কেউ না খেয়ে মরবে না, ইনশাআল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *