পর্যটক ধর্ষণে প্রধান আসামি আশিক আটক
কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি আশিকুল ইসলাম আশিককে (২৯) মাদারীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান জানান, ঘটনার পর আশিক কক্সবাজার থেকে মাদারীপুরে এসে আত্মগোপন করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কক্সবাজারে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আশিকুল ইসলাম আশিক (২৯) বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় হাজিরা দিতে শুরু করেছেন।
কক্সবাজার পৌরসভার ১ম ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার বলেন, পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম বাহারছড়ার আশিকুল ইসলাম আশিক পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী কটেজ জোনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশিক ১৬ নভেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে আরও বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। ২৪ নভেম্বর তিনি এক হোটেল মালিককে বন্দুকের মুখে জিম্মি করে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরদিন আরেক কটেজ মালিককে জিম্মি করে এক লাখ টাকা লুট করে আশিক ও তার সহযোগীরা। তবে কটেজ জোনের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আশিক যেসব হোটেল বা কটেজে লুটপাট করত সেখানে পতিতাবৃত্তি চলত। এ কারণে হোটেল মালিকরা আইনের আশ্রয় নেন না।
সন্ত্রাসী আশিকের বিরুদ্ধে যত মামলা
কক্সবাজার জেলা পুলিশ জানায়, কিশোর বয়সেই অপরাধ জগতে প্রবেশ করে আশিক। তার বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২০ আগস্ট কক্সবাজার সদর থানায় মারামারি আইনে প্রথম মামলা হয়। দশ মাস পর ২০১২ সালের ২০ জুলাই একই থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৪ জানুয়ারী, ২০১৪ একই ধারায় আরেকটি মামলা করা হয়, একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি ডাকাতির চেষ্টা, একটি অস্ত্র এবং অন্যটি হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।
২০১৫ সালের মার্চ মাসে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই বছরের নভেম্বরে অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একই মাসে তার বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও হয়। এরপর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডাকাতি আইনে আরেকটি মামলা হয়। ওই বছরের অক্টোবরে ওই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
গত জুনে আশিকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। নভেম্বরে ডাকাতির মামলা হয়। গত ২৩ ডিসেম্বর গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয়।
বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী
গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আশিকের দলে ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী রয়েছে। এদের মধ্যে বাহারছড়ার মোবারক, ফাহিম, বাবু, মেহেদী হাসান বাবু, ইসরাফিল জয়াসহ আরও কয়েকজন রয়েছেন। কক্সবাজার পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নাসিমা আক্তার বলেন, আশিক ও তার বন্ধুরা বাহারছড়াসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্কিত ছিল। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। তারা নগরীতে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মুনির-উল-গিয়াস জানান, গত ৮ নভেম্বর তাকে ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মিডিয়া মিডিয়াম আদালতে পাঠানো হয়। তবে ১৫ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, অনেক সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে জামিনে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না।