রেললাইনের পাশ থেকে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির উপরের মাটি।লোহাগড়ার আমিরাবাদে মাটি খেকোদের কবলে একশ একর জমি

0

লোহাগড়ার পশ্চিম আমিরাবাদে রাতের আঁধারে রেললাইনের পাশ থেকে কাটা হচ্ছে ফসলের মাটি। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়েছে। মাটি খেকোরা দিনের বেলা নীরব থাকলেও রাতের বেলা কৃষি জমির উপরের মাটি বেপরোয়াভাবে কেটে বিক্রি করে।

জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে একটি সিন্ডিকেট উপজেলার যত্রতত্র মাটি বিক্রির কারবার চালাচ্ছে। আর এসব মাটি পরিবহনের ফলে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সড়কে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। সড়কে ধুলাবালি বাড়ছে। ফসলি জমির ওপরের মাটি ও পাহাড় কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে পশ্চিমের কয়রকুল এলাকায় রেললাইনের পাশে তিনটি স্থান থেকে রাতের আঁধারে খননকারক দিয়ে ফসলি জমির উপরের মাটি কাটা হচ্ছে। আমিরাবাদ। মাটির খেকোরা এসব মাটি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। কিছু জমির উপরিভাগ সম্পূর্ণভাবে কেটে গেছে। কিছু জমি অর্ধেক কেটে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা এক শ্রেণির দালাল দিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির জন্য সাধারণ কৃষকদের উৎসাহিত করছে। আর কৃষকরা লোভ পেয়ে নগদ টাকার আশায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে দিয়েছে।

৮-১০ ফুট গভীর জমি কাটার ফলে অনেক জমি ডোবায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবছর শত শত একর ফসলি জমি কাটা হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন কমছে আবাদি জমির পরিমাণ। ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি উৎপাদন ও জীববৈচিত্র্য।

আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য হোছাইন মুহাম্মদ শরফু জানান, একটি কুচক্রী মহল প্রতিনিয়ত রাতের আঁধারে যন্ত্র দিয়ে কৃষি জমির উপরের মাটি কেটে ফেলছে। মাটির খেকোরা প্রাধান্য থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না এলাকাবাসী। অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে কৃষি জমির পাশাপাশি শত শত মাটি বহনকারী ট্রাক গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি করছে।

এছাড়া এভাবে মাটি কাটা হলে রেললাইনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাসান জানান, কৃষি জমির ওপরের মাটি ও ঢিবি কাটার দায়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে পশ্চিম আমিরাবাদের কয়রকুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে কৃষি জমির উপরের মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *