মিয়ানমার সংঘাত: ওপারে সংঘাত চলছে, এপারে আতংক

0

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফের হোইকং ও হ্নিলা সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সংঘর্ষের এ ঘটনা মিয়ানমারের ৪/৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরে হলেও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন সীমান্তের বাসিন্দারা।

তবে সকাল ১০টার পর থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়নি বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বলিবাজার ও নাগাকুড়া পাড়া। এলাকা দুটি বর্তমানে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন পুনরুদ্ধারের মধ্যে, দেশটির সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে তীব্র আক্রমণ শুরু করছে। সরকারি বাহিনীও বিমান থেকে গোলাবর্ষণ করছে। ওপাশ থেকে আগুনের কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহত সংঘর্ষের কারণে এপারের হ্নীলা ও হোয়াইকুং ইউনিয়নের বিভিন্ন সীমান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সীমান্তবর্তী চিংড়ি ও খামারের মাঠে কাজ করতে যেতে ভয় পাচ্ছেন স্থানীয়রা।

হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে হ্নীলা ইউনিয়নের বিভিন্ন সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কম শোনা গেছে। তবে মধ্যরাতের পর গুলির শব্দের পাশাপাশি একের পর এক বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। রোববার সকালের পর তা বেড়েছে। সকাল ৮টা পর্যন্ত অন্তত ৪০-৫০টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আতঙ্কে রয়েছে সীমান্তের আশপাশের মানুষ।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানান, শনিবার দিনের বেলায় সংঘর্ষের কারণে মিয়ানমারের ভেতরে বসতিগুলোতে আগুন থেকে কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।

হোয়াইকং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ জালাল জানান, মর্টার শেলের বিকট শব্দে তার এলাকায় কম্পন সৃষ্টি হয়। রাতের বেলা ঘন ঘন কম্পনে ঘুম ভাঙছে শিশুদের, অনেকে ভয়ে কান্নাকাটি করছে। হুয়াইকুং ইউনিয়নের বিপরীতে নাফ নদীর তীরে উঠে আসা টোটারদিয়া দুই সপ্তাহ আগে আরাকান আর্মিদের হাতে ধরা পড়ে। এখন মিয়ানমারের সরকারী বাহিনী এটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, রাখাইনে নতুন করে গোলাবর্ষণ ও মর্টার ছোড়ার ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।

তবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের মানুষ চারদিন ধরে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাননি।

যদিও মিয়ানমারের রাখাইন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যদের তৎপর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি টেকনাফস্থ ২য় ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *