ঠাণ্ডাজনিত রোগের চাপ বাড়ছে হাসপাতালের ওপর
ঝুঁকিতে থাকা শিশু ও বৃদ্ধদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা
শীতের রোগ বাড়ছে। শীত বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এই সময়ে শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। এছাড়া বৃদ্ধদের কাশি ও শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের নিয়মিত টিকাদান, সুস্থ জীবনযাপন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, এই তিনটি বিষয়ই নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া শিশুকে ঠাণ্ডা থেকে বাঁচাতে তার হাতে-পায়ে হালকা টুপি ও মোজা পরতে হবে। ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়া উচিত। কোনোভাবেই আগুনের ধোঁয়া জাতীয় কিছু দিয়ে শিশুর শরীর গরম করার চেষ্টা করা উচিত নয়। বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময়, বাচ্চাদের একই পরিমাণ শীতের পোশাক পরিধান করা উচিত যা বড়দের প্রয়োজন। খুব বেশি যেন পরতে না হয়। আর শিশুকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে বর্তমানে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে। তাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। অন্যদিকে চমেক হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা।
চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মির্জা নুরুল করিম বলেন, শীতকালে কিছু রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এর মধ্যে একটি হল শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়া। তাই বয়স্কদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে নিয়মিত মাস্ক পরুন। এছাড়াও নিজেকে উষ্ণ রাখুন।
চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। সাধারণত, কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। প্রি-ম্যাচিউর শিশুদের মধ্যেও নিউমোনিয়া বেশি দেখা যায়। ভিটামিন এ-এর অভাবেও নিউমোনিয়া হয়। এখন নিউমোনিয়া প্রতিরোধে গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের পরে কিছু বিষয়ের যত্ন নেওয়া উচিত। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (শিশু আইসিইউ) ডাঃ ফাহিম হাসান রেজা বলেন, হাসপাতালে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তবে তা এখনও খুব খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায়নি। নিউমোনিয়া এড়াতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের অভিভাবকরা বেশি অসচেতন। তারা শিশুটিকে স্থানীয় গ্রামের নিরাময়কারীদের সাথে চিকিত্সা করে বা আদৌ না করে। শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে তিনি দ্রুত হাসপাতালে যান।