আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।বরিশাল-১ আসনে আ.লীগের একক প্রার্থী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ

0

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশাল-১ (আগাইলঝাড়া-গৌরনদী) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগে কোনো দ্বিমত নেই। আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী সাবেক চীফ হুইফ, বর্তমান সংসদ সদস্য পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদায়), স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বরিশাল জেলার সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এ আসনে আওয়ামী লীগের একমাত্র পরীক্ষিত প্রার্থী ।

ইসলামী আন্দোলনেরও একক প্রার্থী রয়েছে। তবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিতে বেশ কয়েকজন নেতা রয়েছেন, যারা আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য পাহাড় শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদে) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতিতে তিনি অভিভাবক ও সিংহ পুরুষ। দলের নেতারাও তাকে অভিভাবক হিসেবে শ্রদ্ধা করেন এবং মেনে চলেন। দলীয় রাজনীতি, স্থানীয় নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে তার সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেন বরিশাল অঞ্চলের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে বরিশালের ৬টি আসনে একাধিক প্রার্থী থাকলেও বরিশাল-৩ আসনে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বিকল্প কোনো প্রার্থী নেই। আগামী নির্বাচনে বরিশাল-১ আসনে দলের একমাত্র প্রার্থী তিনি। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বরিশাল-১ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে বিগত যেকোনো সময়ের তুলনায় এখানে আওয়ামী লীগ বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল-১ আসন একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২৯টি। এ আসনে ৩ লাখ ৪২ হাজার ৯৩ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭০৬ জন এবং নারী ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৩৩ জন। এছাড়া বরিশাল-১ আসনটি হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বরাবরই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। এদিকে দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। সে হিসেবে বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ অন্য সব নির্বাচন থেকে সরে এসেছে দলটি। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো সম্ভাব্য প্রার্থী সরাসরি মুখ খুলছেন না। তবে বিএনপির একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহান, নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল। , কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান।

এদিকে জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ শাখার সদস্য সেকান্দার আলী সেরনিয়াবাত ও কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম রহমান পারভেজের নাম শোনা যাচ্ছে। আর এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগৈলঝাড়া উপজেলা সভাপতি মেহেদী হাসান রাসেলকে প্রার্থী ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির একাধিক নেতা। নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে, বরিশাল-১ আসনে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ড. ১০টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছয়বার, বিএনপি তিনবার ও জাতীয় পার্টি দুইবার জয়লাভ করেছে। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শ্যালক আবদুর রব সেরনিয়াবাত এই আসন (তৎকালীন বাকেরগঞ্জ-১৩) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং মন্ত্রী হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যারা নিহত হন তাদের মধ্যে আবদুর রব সেরনিয়াবাতও একজন। শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাতের মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ১৯৯১ সালে বরিশাল-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির কাজী গোলাম মাহবুব। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বামপন্থী সাবেক ছাত্রনেতা এম জহিরুদ্দিন স্বপনের কাছে অল্প ব্যবধানে হেরে যান। তবে নির্বাচন ও ফলাফল নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক।

২০০১ সালের নির্বাচনের পর, আগিলঝাড়ার সংখ্যালঘু নির্বাচন সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। আর ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকেই দুর্বল নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিতে বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়। তবে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় এ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার। ইউনুস। তিনি এফ-এর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *