কলেজগেট থেকে কুড়িল চার ঘণ্টা

0

শনিবার দুপুর পৌনে ১২ টা টঙ্গীর কলেজ গেট। মাথার ওপর সূর্যের তাপ। রাস্তায় দাঁড়িয়ে হুমায়ুন কবির।

বাসের জন্য তার দীর্ঘ অপেক্ষা। কিন্তু কোনো বাস চোখে পড়ে না। ২০ মিনিট পর অপেক্ষার অবসান হল। বলাকা পরিবহনের একটি বাস এল।

তিনি কোনোভাবে একটি পা রাখার জায়গা পেলেন. ঠেলে একটু জায়গা পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সে।

কিন্তু হুমায়ুন কবিরের স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

স্বস্তি অস্বস্তিতে পরিণত হয়। বাসে তার সঙ্গী ছিল সাড়ে চার ঘণ্টার যন্ত্রণা। যানজট ও দুর্ভোগ পেরিয়ে বিশ্বরোডে নেমে যান হুমায়ুন কবির কুড়িল। ঘড়িতে তখন বিকাল ৩:৫০। অন্য দিন ১৩.৭ কিমি এই দূরত্ব অতিক্রম করতে তার সময় লাগে এক ঘন্টা ১০ থেকে ২০ মিনিট।

হুমায়ুন কবির বলেন, চাকরির সুবাদে তাকে প্রতিদিন টঙ্গীর কলেজ গেট থেকে এনডিডিএ আসতে হয়। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি সময় লেগেছে তার। তিনি বলেন, ‘আজ (গতকাল) সমাবেশের কারণে বাস পাওয়া যায়নি। আমাদের চোখের সামনেই বেশিরভাগ বাস রিজার্ভ ছেড়ে যাচ্ছিল।

টঙ্গী থেকে কুড়িল বিশ্বরোডে গতকালের যানজটের কারণ জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক মনিবুর রহমান বলেন, ভিআইপি মুভমেন্ট ছিল এবং সেটিই যানজটের কারণ। পরিস্থিতি তেমন খারাপ না হলেও রাজধানীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি যানজট ছিল।

সরেজমিনে রাজধানীর গুলিস্তান, কাকরাইল, শাহবাগ, মিরপুর রোড, ফার্মগেট, সায়েন্সল্যাব এলাকায় যানজট দেখা যায়।

হাইকোর্ট মোড় থেকে ধানমন্ডি ১৫ নম্বরে পৌঁছাতে সুমন আহমেদের সময় লেগেছে এক ঘণ্টা ১০ মিনিট। সুমন বলেন, ‘সাধারণ যানজট থাকলেও ৩০ থেকে ৩৫ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছানো যায়। কিন্তু শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাবে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগেছে।

শাহবাগ থেকে সাইন্সল্যাব ও আশপাশের সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। রিকশা থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। অনেকেই প্রাইভেট কার নিয়ে কেনাকাটা করতে যান। রাস্তার পাশে পার্কিং করলে যানজট বাড়ে।

আসন্ন দুর্গাপূজার জন্য পরিবারের আরও তিন সদস্যের সঙ্গে কেনাকাটা করতে এসেছেন দিলীপ সাহা। যানজট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নতুন আর কী? ঢাকার পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সরকারি বড় বনধ ছাড়া ঢাকার অবস্থা এমনই রয়ে গেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা একাধিক কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে সড়কগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানজট। এছাড়া সড়কে শৃঙ্খলার অভাব রয়েছে। অনেকেই ট্রাফিক আইন মানতে চান না। রাস্তার পাশ নানাভাবে দখল হয়ে আছে। এ ছাড়া ফুট ওভারব্রিজ থাকা সত্ত্বেও অনেকে হাত নেড়ে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছেন। একই সঙ্গে কয়েকটি প্রধান সড়কে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রিকশার দৌরাত্ম্য বেশি।

গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে কুড়িল এলাকায় যানজটের সীমা ছাড়িয়ে যায়। যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের ফুট ওভারব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে নতুনবাজার থেকে কুড়িলমুখী পর্যন্ত সড়কে যানবাহন আটকা পড়ে। গাড়ি নড়ছে না। তবে নববাজারের দিকে উল্টো পথে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *