‘সকালের ’নাশতায় অনেক খরচ’
সবজি আর দুইটা পরোটা খেলাম। নিল ৪৫ টাকা। একটি ডিম আর একটা পরোটা নিমু সেই উপায় নেই। সকালের নাস্তায় অনেক খরচ হয়।
আমার পকেটে এত টাকা নেই।’ সকালের নাস্তা সেরে দুঃখ প্রকাশ করেন রিকশাচালক রাসেল মিয়া (৩২)। রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় এলাকায় ‘মানর মুশন্দাবর’ নামের একটি সাধারণ খাবারের হোটেলে তার সঙ্গে কথা হয়।
রাজধানীর কয়েকটি খাবার হোটেল ঘুরে দেখা গেছে, একটি পরোটার সর্বনিম্ন দাম ১০ টাকা। তবে হোটেলের মান ও অংশের আকার ভেদে অংশ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। ডাল ও সবজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়। বেশির ভাগ হোটেলে সকালের নাস্তায় ডিমের দাম ২০ টাকা। ফলে দুইটা পরোটার, সবজি ও ডিমের সঙ্গে সকালের নাস্তার দাম দাঁড়ায় ৬৫ টাকা।
বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ০৩ শতাংশ। বাজারে এখন একটি ডিমের দাম ৬০ টাকা। টিসিবির তালিকায় থাকা ১৬টি মসলাজাত পণ্যের মধ্যে একটির দাম গত বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ ১৫০ শতাংশ এবং অন্যটির দাম সর্বনিম্ন ৩ শতাংশ বেড়েছে। ডিম ছাড়াও গত সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ, মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ। একই সঙ্গে বেগুন, কুমড়া, লাউ, পেঁপের মতো সবজির দাম বাড়ছে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এসবের সরাসরি প্রভাব পড়ছে রেস্টুরেন্টের খাবারের দামের ওপর।
রেস্তোরাঁ মালিকরা বলছেন, সকালের নাস্তা বিক্রির খরচ আগের চেয়ে কম। এশিয়া গার্ডেন রেস্তোরাঁ, পারাবত রেস্তোরাঁ, ফকিরাপুল বাস স্ট্যান্ডের কাছে গাউছিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ রেস্তোরাঁয় চেয়ার-টেবিল খালি ।
গাউছিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক সাহাবুদ্দিন বলেন, “কেউ আর সকালের নাস্তায় মুরগি খায় না। ডিম, সবজি ও ভাজি খায়। সকালের নাস্তা আগের চেয়ে বেশি বিক্রি হয়ই না।
বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান বলেন, রাজধানীর রেস্তোরাঁগুলোতে বিক্রির হার প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। তিনি বলেন, “খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ প্রয়োজনের বেশি খরচ করে না। রেস্তোরাঁয় সকালের নাস্তায় সবজি-ভাজি বা ডালের সঙ্গে পরোটা খান। যতক্ষণ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততক্ষণ এভাবেই চলবে।