সিকিমে নিখোঁজ শতাধিক, বিপাকে তিন হাজার পর্যটক
ভারতের সিকিমে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। তিস্তার বন্যায় গ্রামের পর গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নিখোঁজের সংখ্যাও বেড়ে ১০২ হয়েছে। এছাড়া তিন হাজারের বেশি পর্যটক সেখানে আটকা পড়েছেন।
প্রবল বৃষ্টির কারণে উত্তর সিকিমের লোনা হ্রদে পানি উপচে পড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর চুংথাং বাঁধ থেকে তিস্তা নদীতে পানি ছাড়া হয়। এতে তিস্তার পানির স্তর বেড়ে যায়।
বাঁধ খুলে দেওয়ার পর সেখানকার জলস্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়েছে। এর ফলে সিংটামের কাছে বারডাংয়ে অবস্থানরত বেশ কয়েকটি সেনা গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে তিস্তা নদীর পানি। পাশের বাঁধ থেকে আরও বেশি পানি নদীতে প্রবেশ করায় পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে খারাপ হয়।
রাজ্যের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সংযোগকারী দুটি সেতু ভেঙে পড়েছে। ফলে পরিবহন সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবিসি বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছে, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে। রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও উদ্ধার অভিযান চলছে।
এ প্রসঙ্গে সিকিমের মুখ্যসচিব ভিবি পাঠক বলেন, “মঙ্গলবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লোনাক হ্রদের জলস্তর বেড়েছে এবং উপচে পড়তে শুরু করেছে। যার ফলে তিস্তার জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। চুংথাং অঞ্চলে তিনটি বাঁধ। অবিরাম বৃষ্টির কারণে ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে ১২ থেকে ১৪ জন শ্রমিক ওই বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন। গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ২৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বারডাং অঞ্চলের ২৩ জন সেনা এখনও রয়েছেন। অনুপস্থিত
বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। নিচু এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই এলাকায় আটকে পড়াদের মধ্যে ৩,০০০ এরও বেশি পর্যটক রয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় সিকিম সরকার এনডিআরএফ-এর তিন বাহিনীকে অনুরোধ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার তা অনুমোদন করেছে। এনডিআরএফ-এর একটি দল ইতিমধ্যেই সাহায্যের জন্য সেখানে পৌঁছেছে। রাজ্য সরকার কিছু অঞ্চলে ১৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।
হিমালয় রাজ্য বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ। গত বছর ওই এলাকায় ভয়াবহ বন্যায় হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং অন্তত ২৪ জন নিহত হয়।