শেষ সময়ে জাতীয় সংসদে বিল পাসে নতুন রেকর্ড

0

একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ মেয়াদে বিল পাসের ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। সংসদ অধিবেশনের গত ৯ কার্যদিবসে ১৮টি বিল পাস হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে দুটি বিল পাস হওয়ার কথা অতীতে শোনা যায়নি। আগামী অধিবেশনে সংসদে পাসের অপেক্ষায় থাকা ১১টি বিলসহ বেশ কিছু নতুন বিল পাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

চলতি সংসদের শেষ অধিবেশন (২৫ তারিখ) অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। আর তা হলে সংসদের সর্বোচ্চ সংখ্যক অধিবেশন বসার রেকর্ড তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমান সংসদের মেয়াদ ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকলেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আর কোনো অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে না। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন আহ্বান করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই নতুন কোনো অধিবেশন বসার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কারণ ২৪তম অধিবেশন ১৪ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল পেন্ডিং থাকায় সরকার আরও একটি অধিবেশন চায়।

অধিবেশন ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে পারে, যা দুই সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের কার্যদিবস কম ছিল। একাদশ সংসদও মাত্র একদিন বসার রেকর্ড গড়েছে। বর্তমান সংসদের ২৪টি অধিবেশনের মোট কার্যদিবস ছিল ২৬৩টি। এর আগে দশম সংসদের ২৩টি অধিবেশনের মোট কার্যদিবস ছিল ৪১০টি।

আর নবম জাতীয় সংসদে মোট কার্যদিবস ছিল ৪১৮ দিন, যা দেশের সংসদীয় ইতিহাসে সর্বোচ্চ। নবম জাতীয় সংসদে ২৭১টি বিল পাস হয়েছে। এটি বিল পাসের জন্য সংসদের রেকর্ডও। এরপর দশম সংসদে পাস হয় ১৯৩টি। আর বর্তমান সংসদের ২৪টি অধিবেশনে ১৪০টি বিল পাস হয়েছে।

সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান সংসদের ২৪তম অধিবেশন শুরু হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর। প্রথম দিনে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং সংসদের দুই সদস্যের মৃত্যুতে অধিবেশন মুলতবি থাকায় কোনো বিল পাস হয়নি। বর্তমান সংসদ। চলতি অধিবেশনে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ২৯টি বিলের মধ্যে ১৮টি বিল পাস হয়েছে। এই অধিবেশনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা বিল, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিল-২০২৩ এবং ভূমি সংক্রান্ত আরও দুটি বিল পাস হয়। এ ছাড়া পাঁচটি বিল ঝুলে আছে, যা আগামী অধিবেশনে পাস হবে।

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী মাসে শেষ অধিবেশন বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন। সে কথা মাথায় রেখেই সংসদে বিল উত্থাপন করা হচ্ছে। বিল পাসের ক্ষেত্রে একটু তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরাও বেশ কয়েকটি বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নেন এবং বিষয়টি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আগামী অধিবেশনেও তাই হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, সরকারের শেষ সময়ে পাস হওয়া বিলের সংখ্যা বেশি হবে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ একটি বিল পাসের আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যে কারণে বিলটি সংসদে উত্থাপন করতে দীর্ঘ সময় লাগে। ফলে শেষের দিকে বিল বেশি জমে। এবং সবশেষে গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *