ঢাকার প্রবেশপথে আটটি সমাবেশ করবে বিএনপি

0

সরকার পতনের দাবিতে ঢাকার প্রবেশপথে আটটি সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। আর জেলা পর্যায়ে পাঁচটি রোডমার্চ হবে। গত ২৯ জুলাই ঢাকার চারটি প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। কিন্তু কাঙ্খিত সাফল্য পায়নি দলটি।

গতকাল রোববার রাতে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার দুপুর আড়াইটায় দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। গত শুক্রবার এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আগামীকাল ১৯ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জে সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। ১২ দিনের কর্মসূচি শেষ হবে ৩ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চের মাধ্যমে।

গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠক করে কর্মসূচির খসড়া তৈরি করেন। পরে তা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়। শীর্ষ নেতারা তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন।

দলটির একাধিক সূত্র জানায়, আগামী এক মাসের মধ্যে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সাফল্য পেতে চায় বিএনপি।

এ জন্য আন্দোলনকে বেগবান করতে কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনছে দলটি। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিনের কর্মসূচির পর দলের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক সিনিয়র নেতা বলেন, ১২ দিনের কর্মসূচি চালু করা সহজ হবে না। ঢাকার প্রবেশমুখে সমাবেশে আশপাশের জেলা থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে পথে হামলাও হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

জেলা পর্যায়ে রোডমার্চ নিয়ে তারা বেশি শঙ্কিত। গতকাল নাটোরে যুব রোডমার্চে হামলা হয়েছে।

বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মতে, অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অক্টোবর চূড়ান্ত আন্দোলনের উপযুক্ত সময়। তফসিল ঘোষণার আগে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান দলটির নীতিনির্ধারকরা। এই চিন্তা মাথায় রেখেই ১২ দিনের এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আন্দোলনে আছি। এখন ধারাবাহিক কর্মসূচি আসবে। একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

অক্টোবরের কর্মসূচি কী হতে পারে জানতে চাইলে গয়েশ্বর রায় বলেন, আন্দোলন করলে অনেক ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাই আন্দোলন কী ধরনের কর্মসূচি দিতে হবে তা বলে দেবে। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

১৯ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জের টঙ্গী ও গাজীপুরে সমাবেশ করবে বিএনপি। ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার আরেকটি প্রবেশদ্বার নয়াবাজার ও আমিনবাজারে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সমাবেশের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর পেশাজীবী সমাবেশ, ২৯ সেপ্টেম্বর নারী সমাবেশ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর কৃষক-শ্রমিক সমাবেশ হবে রাজধানীতে।

২১ সেপ্টেম্বর প্রথম রোডমার্চ ভৈরব থেকে শুরু হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার হয়ে সিলেটে গিয়ে শেষ হবে। ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে। বরিশাল থেকে ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী হয়ে কর্মসূচি শেষ হবে। ২৬ সেপ্টেম্বর রোডমার্চ হবে খুলনা থেকে। রোডমার্চটি ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ এবং ৩ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক আইনজীবী নেতা জানান, এসব কর্মসূচির মধ্যে আদালতমুখী কর্মসূচিও চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *