আরো ৩০টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত ,রপ্তানির আড়ালে দেড়শ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা

0

দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানির জন্য ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পান। আর সেই সুযোগে ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান জাল কাগজপত্র তৈরি করে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে আশঙ্কা করছে চট্টগ্রাম শুল্ক কর্তৃপক্ষ।

এর আগে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তদন্তে ১০ পোশাক রপ্তানিকারকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকার তথ্য পাওয়া যায়। কারখানাগুলো কানাডা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানির আড়ালে টাকা পাচার করে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শুধু প্রণোদনা চুরিই নয়, রপ্তানির জন্য ক্রেতাদের কাছে নমুনা পাঠানোর নামে কোটি কোটি টাকা চুরি করেছে এই চক্র। এমন প্রায় ২০টি স্থাপনার সন্ধান পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এসব প্রতিষ্ঠান বিদেশে যে পরিমাণ নমুনা পাঠিয়েছে তা দেশে পৌঁছায়নি বলে মনে করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। জালিয়াতিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের জেলা প্রশাসক ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী বলেন, সম্প্রতি কিছু অসাধু রপ্তানিকারক রপ্তানির নামে অর্থ আত্মসাৎ, নমুনার নামে রপ্তানিসহ নতুন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এবং এসব নমুনার অধিকাংশই রপ্তানি আয় পায় না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, “সম্প্রতি, আমরা নগদ প্রণোদনার সুবিধা নিয়ে রপ্তানির আড়ালে ৩০টি সংস্থাকে চিহ্নিত করেছি। প্রাথমিকভাবে, আমি মনে করি যে এই প্রতিষ্ঠানগুলি প্রায় ১৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

‘মোঃ বদরুজ্জামান মুন্সী বলেন, প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা, জনবল বৃদ্ধি ও নজরদারি বৃদ্ধির ফলে এসব জালিয়াতি এখন নিয়মিত ধরা পড়ছে। এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অর্থ পাচার হচ্ছে কি না তা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত মার্চ ও সেপ্টেম্বর মাসে ২০টি চালান ধরা পড়েছে। দেখা যায় যে পরিমাণ পণ্য পাঠানোর ঘোষণা দেওয়া হয় তার চেয়ে ৪০-৫০ শতাংশ কম পণ্য রপ্তানি হয়। এতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাসহ কিছু সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টও জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে সম্প্রতি রপ্তানির নামে ১০টি কোম্পানির বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে চার কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সাত দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিজিএমইএ নেতারা বলেন, জবাব সন্তোষজনক না হলে এসব প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ড. শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, রপ্তানির নামে অর্থ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত চারটি কারখানার সদস্যপদ বাতিল করবে বিজিএমইএ। এ ছাড়া রপ্তানি সংক্রান্ত সব ধরনের সেবাও বন্ধ রয়েছে কারখানাগুলো। এসব কারখানায় কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। নোটিশের সাত কার্যদিবস পর বিজিএমইএর সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার প্রতিটি কারখানাকে আলাদা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কারখানাগুলো হলো আশুলিয়ায় প্রজ্ঞা ফ্যাশন, রাজধানীর কচুক্ষেতে অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার, টঙ্গীতে হংকং ফ্যাশন এবং উত্তর খানের ফ্যাশন ট্রেড। চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বাকি ছয়টি কারখানা বিজিএমইএর সদস্য নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *