পাকিস্তানের সংসদ ভেঙে দেওয়া হলো
পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের করা আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্টে আরিফ আলভি। ফলে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন দিন আগে দেশটির নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়। একই সময়ে, পাকিস্তানের ফেডারেল মন্ত্রিসভাও কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টে ভবন অনুসারে, প্রেসিডেন্টে আরিফ আলভি দেশের সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে অনুমোদন দিয়েছেন।
দেশের সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রেসিডেন্টে যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে।
এর আগে বুধবার রাতে শেহবাজ শরীফ প্রেসিডেন্টে আরিফ আলভিকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি পাঠান। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানায়, ওই রাতেই প্রেসিডেন্টে পিটিশনে স্বাক্ষর করেন।
পাকিস্তানি গণমাধ্যমের মতে, সংসদ ভেঙে দেওয়ার আবেদনের সারসংক্ষেপ সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এর মধ্য দিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নতুন তত্ত্বাবধায়ক গঠনের পথে এগোবেন।
সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং জাতীয় পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতার কাছে ৩ দিন সময় রয়েছে। তারা এ বিষয়ে একমত হতে ব্যর্থ হলে বিষয়টি জাতীয় পরিষদের স্পীকার কর্তৃক গঠিত কমিটির কাছে পাঠানো হবে, যারা ৩ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি নাম চূড়ান্ত করবে।
তবে কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে মনোনীতদের নাম পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়। এরপর কমিশনের কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ২ দিন সময় রয়েছে।
পাকিস্তানের বর্তমান সংসদের মেয়াদ ১২ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তবে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিলে পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তবে গত সপ্তাহে সাধারণ স্বার্থ পরিষদের বৈঠকে ২০২৩ সালের আদমশুমারির অনুমোদন দেওয়া হয়। ফলে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে। জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা আগামী বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এর আগে মঙ্গলবার, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ একটি ইভেন্টে বলেছিলেন যে নির্ধারিত সময়ের ৩ দিন আগে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হবে। এরপর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আগামী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।