ভারী বর্ষণ ও ভূমিধসের কারণে কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
টানা তিনদিনের টানা বর্ষণে রাঙামাটিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ভূমিধসের কারণে জানমালের নিরাপত্তায় শনিবার সকাল থেকে কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের নৌকা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান স্বাক্ষরিত জরুরি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে, আইন প্রয়োগকারী এবং জরুরি সরকারি কাজে নিয়োজিত জাহাজগুলি নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে অব্যাহতি পাবে। এ ছাড়া যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টি আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে যে কোনো সময় ভূমিধসের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে সড়কের কয়েকটি স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে ছোট ছোট ভূমিধসের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
অন্যদিকে টানা বর্ষণে ভূমিধসের আশঙ্কায় জেলা প্রশাসন সতর্কতা হিসেবে পাহাড়ের পাদদেশে বিপজ্জনক পরিবেশে বসবাসকারী মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সচেতনতামূলক মাইকিং চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে রাঙামাটি শহরের ২৯টি স্পটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিপজ্জনক জায়গায় বসবাসকারীদের নিরাপত্তার জন্য ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে অনেকেই জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মানছেন না। শনিবার বিকেলে দেখা গেছে, রূপনগর লোকনাথ মন্দির, শিমুলতলীসহ কয়েকটি স্থানে গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন বাড়িতে অবস্থান করছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, টানা বর্ষণে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বসবাসকারীদের জন্য তিন দিন ধরে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের সাথে প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বাসিন্দাদের সেসব জায়গায় নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে অনুরোধ করেছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু তারা শুনছে না।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে টানা ভারী বর্ষণে ৫ সেনাসদস্যসহ ১২০ জন প্রাণ হারান।