স্বাস্থ্য কথা।হঠাৎ পুড়ে গেলে কী করবেন
প্রতিদিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হিসাবে আগুন, গরম পানি বা বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হয়। অনেক সময় এগুলো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এবং শরীরের যেকোনো অংশ পুড়ে যেতে পারে। তা হলে কী করবেন তা নিয়েই আজকের আলোচনা।
প্রথমে, দুর্ঘটনার ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে সরিয়ে দিন। কারণ আগুনের ধোঁয়া উদ্ধারকারী এবং শিকার উভয়ের শ্বাসনালীতে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে মৃত্যু হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, আক্রান্ত স্থানের আশেপাশে যেকোনো পোশাক বা গয়না দ্রুত সরিয়ে ফেলুন।
এরপর আক্রান্ত স্থানে স্বাভাবিক তাপমাত্রার গরম পানি বা হালকা হলুদ ঢালতে থাকুন। ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা বরফ বা ঠান্ডা পানি ঢালবেন না।
শিকার গরম রাখুন। একাধিক পোড়া হলে, পানি লাগালে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়, একে হাইপোথার্মিয়া বলে। হাইপোথার্মিয়া এড়াতে ক্ষতস্থানে পানি ঢালা ছাড়াও প্রয়োজনে রোগীর শরীরের বাকি অংশ গরম কাপড় বা কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখুন।
পোড়া জায়গায় কখনও টুথপেস্ট, নারকেল তেল বা ডিমের সাদা অংশ লাগাবেন না। এতে পরবর্তীতে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সিল্ক ক্রিম বা বার্না ক্রিম নামে কিছু মলম বাজারে পাওয়া যায়, আপনি সেগুলো পরিষ্কার হাতে লাগাতে পারেন। পোড়া জায়গার প্রাথমিক ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
পোড়া জায়গার ফোস্কা ঘরে ফেটে যাবে না বা সুই দিয়ে খোঁচা দিয়ে রস বের করে দেবে। এটি জীবাণুর শরীরে প্রবেশের পথ তৈরি করে।
কখন হাসপাতালে যেতে হবে-
১. শরীরের একটি বড় অংশে পুড়ে গেলে।
২. কোনো রাসায়নিক, এসিড বার্ন বা বৈদ্যুতিক শক হলে হাসপাতালে যেতে হবে।
৩.মুখে, গলায় বা ঘাড়ে, হাত-পায়ের তালুতে, শরীরের স্পর্শকাতর অংশে, শরীরের যেকোনো জয়েন্টে (হাড়ের সংযোগস্থলে) পোড়া হলে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে। কারণ এই অংশগুলো খুবই সংবেদনশীল এবং এসব স্থানে পুড়ে গেলে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৪. যদি ত্বক পুড়ে যায় এবং সম্পূর্ণ সাদা হয়ে যায়, যদি পোড়া জায়গায় কোন অনুভূতি না থাকে, তাহলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
৫. গর্ভাবস্থায় শরীরের কোনো অংশ পুড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৬. পোড়া ছাড়াও, অন্য কোন আঘাত থাকলে – যেমন উপর থেকে পড়ে গেলে বা রোগীর আগে থেকেই ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে।