বাংলাদেশ-আফগানিস্তান।চট্টগ্রামে বিশ্বকাপ অনুশীলন

0

বাংলাদেশ সিরিজে স্পষ্ট ফেভারিট কিনা এমন প্রশ্নে নড়েচড়ে বসেন আফগানিস্তান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদি। হাসিমুখে বললেন, ‘আমরাও খেলতে এসেছি।’ এই বাক্য থেকেই বোঝা গেল সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশকে ফেভারিট মনে করে না আফগানিস্তান। কিছু পরিসংখ্যান মিশ্রিত করে হাসমতউল্লাহ বুঝিয়ে দিলেন, আজ থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।

এই দাবি কতটা বাস্তবসম্মত, তা বোঝা যাবে ম্যাচ শুরুর পর। তবে কথার লড়াইয়ে তামিম ইকবালের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে হাসমতউল্লাহ। এটা খেলার মাঠে খুব একটা সাহায্য করে না। মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে ম্যাচ জেতা যায় না, বিশেষ করে অভিজ্ঞ দলের বিপক্ষে। তামিম ২০২২ সালে চট্টগ্রামে তা প্রমাণ করেছিলেন। বাংলাদেশ গতবারের চেয়ে বেশি প্রভাব নিয়ে সিরিজ জিতলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশকে সেই মানসম্পন্ন দল বলা যেতে পারে। হাসমতউল্লাহ না মানলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স মূল্যায়নে স্পষ্ট ফেভারিট বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করার অপেক্ষায় যারা। কারণ এই সিরিজটিও বাংলাদেশের জন্য বিশ্বকাপের রিহার্সাল।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ যে ভালো দল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সেই স্বীকৃতি নিহিত রয়েছে বিশ্বকাপ সুপার লিগের পারফরম্যান্সে। তামিমরা ২৪টি ম্যাচ খেলে ১৫টিতে জিতে ১৫৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থান থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। সুপার লিগে বড় দলকে হারানোর রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশের। দেশে-বিদেশে শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারান। সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হেরেছে ভারত, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বসিত। আফগানিস্তান তাদের সুপার লিগের বেশির ভাগ ম্যাচ খেলেছে নিচের র‍্যাঙ্কের দলগুলোর বিরুদ্ধে – জিম্বাবুয়ে, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ জিতে ২০ পয়েন্ট পেয়েছে তারা।

আফগানরা ভাগ্যবান যে ভারত, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে হয়নি। সেদিক থেকে বলা যায়, বিশ্বকাপ সুপার লিগে রশিদ খানকে পরীক্ষা দিতে হয়নি। এই জায়গায় বাংলাদেশ খুবই সফল দল। সব মিলিয়ে আজ সামনে থেকে খেলবে বাংলাদেশ। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দুদিন আগে জানিয়েছিলেন, টেস্ট জয়ের ছন্দে ওডিআই সিরিজ খেলতে চান তিনি।

বিশ্বকাপের বিবেচনায় এই সিরিজটি বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের জন্য খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ দুই দলই সুপার লিগ থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে। সেদিক থেকে এটা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সিরিজ। দুই দলেরই লক্ষ্য থাকবে সিরিজে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা একটু বেশিই প্রযোজ্য। দেশের মাটিতে এটি একটি খেলা, অন্যদিকে বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচ খেলতে হবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

তামিমের মতে, প্রতিযোগিতাটি আগের সিরিজের মতোই থাকবে। কারণ, আফগানিস্তান সাদা বলের অন্যতম শক্তিশালী দল। গত সিরিজ থেকে কম কিছু আশা করছি না। অবশ্যই সিরিজ জিততে চাই। আমি গতবারের মত ২-১ এর পরিবর্তে ৩-০ চাই। তবে জিততে হলে তাদের সঙ্গে সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। আমি মাঠে জিততে যাচ্ছি এমনটা নয়। কারণ তাদের কাছে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণ রয়েছে। বিশ্বকাপের আগে এই তিনটি এবং এশিয়া কাপে মোট চারটি ম্যাচ খেলা ভালো। দুই দলের খেলা দেখার জন্য এটি একটি ভালো সুযোগ। আমরা তাদের শক্তি এবং দুর্বলতা খুঁজে বের করতে চাই. একইভাবে, তারা দেখবে আমরা কী ভালো করছি আর কী করছি না। বিশ্বকাপের আগে নির্দিষ্ট দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের আগে তাদের সঙ্গে তিন-চারটি ম্যাচ খেলাটা খুবই ভালো দিক।

এই সিরিজটিও বাংলাদেশের জন্য একটি পরীক্ষা। সাত নম্বর ব্যাটসম্যান বাছাই করতে পরীক্ষা হতে পারে আফিফ হোসেনকে। একাদশে জায়গা করে নিতে লড়াই হবে পেস বোলিং বিভাগে। তিন পেসার হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান খেলতে পারেন। পাঁচজন বোলার খেললে একজন ব্যাটসম্যান বেশি খেলবে। কারণ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে চট্টগ্রামে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে সিরিজ নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। আফগানিস্তানের শক্তিশালী বোলিং লাইন আপে আরও একজন ব্যাটসম্যান খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *