জুলাই থেকে ১০ শতাংশ বেতন বাড়বে  সরকারি চাকুরিদের

0

জুলাই থেকে বাড়ছে সরকারি কর্মচারীদের বেতন। ১ জুলাই থেকে তারা তাদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ পাবেন। সাধারণভাবে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (বৃদ্ধি) হয় ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির জন্য সামঞ্জস্য করার পর আরও ৫ শতাংশ যোগ করা হবে। আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে কিছুটা বিলম্ব হলেও ১০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

তবে নিম্ন গ্রেডের কর্মীরা এতে খুশি নন। বাজেটের ভিত্তিতে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের বৈষম্য কমিয়ে বেতন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন পে-স্কেল প্রণয়ন বা পে-স্কেল না হলে কর্মচারীরা দাবি জানান। সরকার ঘোষিত সাময়িক প্রণোদনায় কোনো দাবিই পূরণ হয়নি বলে মনে করেন তারা। ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীরা মনে করেন যে তারা বিদ্যমান বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এই কাঠামো দিয়ে যা করা হোক না কেন, মূল সুবিধা যাবে উচ্চ গ্রেডের কর্মচারীরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত রোববার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ভাষণ দেওয়ার সময় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ নতুন প্রণোদনা ঘোষণা করেন। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বেতন বাড়ানোর প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। একটি সারসংক্ষেপ এখন অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে। এরপর তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবে। জুলাইয়ের মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।

জানা গেছে, অতিরিক্ত ৫ শতাংশের জন্য সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা। অতিরিক্ত প্রণোদনা এককালীন নয়, তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মাসিক বেতনে যোগ করা হবে।

২০১৫ সালের জুলাই মাসে, বেতন স্কেল ঘোষণা করা হয়েছিল এবং সরকারি কর্মচারীদের বেতন ১০০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এরপর থেকে প্রতি বছর জুলাই মাসে কর্মচারীরা ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় ইনক্রিমেন্ট বাড়ানোর জন্য অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আগামী অর্থবছরে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে পৌঁছেছে। গত বছরের জুন থেকে মে পর্যন্ত এক বছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মূল্যস্ফীতির যন্ত্রণা কমাতে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ৫ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সবার খোঁজখবর রাখেন। তবে আরও ৫ শতাংশ বাড়লে ভালো হতো। কারণ মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করে তা ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, বেতন বৃদ্ধির হিসাবকে সদিচ্ছা ফাঁকি বলে অভিহিত করছেন কর্মচারী সংগঠনের নেতারা। তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইনক্রিমেন্ট হবে, এটাই ছিল গত পে-স্কেলের সিদ্ধান্ত। সরকার ইনক্রিমেন্ট না দিয়ে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, অর্থাৎ এটি একটি সাময়িক উদ্যোগ। ভবিষ্যতে নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করা হলেও তা যোগ করা হবে না। তাই নতুন ঘোষিত প্রণোদনা নিয়ে মোটেও খুশি নন কর্মীরা।

ইতিমধ্যে, ৭৫০,০০০ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা অবসরকালীন সুবিধা ভোগ করছেন তারাও সরকার ঘোষিত নতুন সুবিধা পেতে আবেদন করেছেন। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব ও সাবেক মহাসচিব আবু আলম মো: শহীদ খান বলেন, যারা অবসরে যাচ্ছেন তাদের অবস্থা মূল্যস্ফীতির চাপে। অতএব, বর্তমান কর্মশক্তির জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনার মধ্যে অবসর গ্রহণকারী সুবিধাভোগীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। কারণ, তারা এখন দেশের সেবা করে অবসর জীবনযাপন করছেন।

এ ছাড়া বিশেষ প্রণোদনার বিষয়টি পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে একাধিক সংগঠন। সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারের ঘোষণায় ‘বিশেষ প্রণোদনা’ উল্লেখ করে এ উদ্যোগকে দুর্বল করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে নতুন করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সংগঠনের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দিলে পরিবারের মৌলিক চাহিদা পূরণ, গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল, পরিশোধে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। ভাড়া

বাংলাদেশ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদের মহাসচিব আবু নাসির খান সরকার ঘোষিত প্রণোদনাকে তামাশা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, উদ্দীপনা ঘোষণা সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় খুবই ছোট, যা বেতনের ব্যবধানকে আরও প্রসারিত করবে। নবম জাতীয় বেতন কমিশন অবিলম্বে কার্যনির্বাহী আদেশে সচিবালয় এবং অন্যান্য বিভাগ এবং পদবী এবং বেতন সহ গঠন করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *