পুরনো ইট ও মাটি ফেলে মেঘনা নদী দখল
পুরনো ইট ও ইটভাটার মাটি ফেলে মেঘনা নদী দখলের অভিযোগ উঠেছে। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দশানী গ্রামের খেয়াঘাট এলাকার এমএইচকে ইটভাটার লোকজন কয়েক বছর ধরে নদী ভরাট করে আসছে। এ কারণে নদী সরু হয়ে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে এই ভরাট কাজ চললেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা।
জানা যায়, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দশানী গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে এক সময় মেঘনা নদী প্রবাহিত ছিল। সময়ের বিবর্তনে গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে নদী অন্য দিকে চলে গেছে। মেঘনার গতিপথ বিভিন্ন স্থানে সংকুচিত হলেও দশানী এলাকায় ৪০০-৫০০ ফুট চওড়া রয়েছে। এ নদীর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিদিন শত শত জাহাজ চলাচল করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দশানী গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে বাজার সংলগ্ন ইটভাটা এলাকায় এই ভাটা সংলগ্ন মেঘনা নদীর নিচু এলাকায় পুরাতন ইট ও মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে এম.এইচ. ভরাট জায়গায় নতুন ইট বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। কয়েকটি নৌকা থেকে মাটি তুলে এখানে রাখা হচ্ছে। দখলকৃত জমিতে ভাটার শ্রমিকদের থাকার জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ইটভাটা শ্রমিক শাহ আলম বলেন, ইটভাটার বর্জ্য ইট দিয়ে জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে অল্প অল্প করে শূন্যস্থান পূরণ হচ্ছে।
দশানী গ্রামের কলন মিয়া বলেন, হুমায়ুন চেয়ারম্যান ইট-মাটি বানাচ্ছেন ফালাইয়া গ্যাং (নদী) ভৈরা ফালাইছে। চার-পাঁচ বছর ধরে ভরাট হচ্ছে হেরা নদী। হেরা খুব জোরে, কেউ কিছু বলতে চায় না।
কৃষক ইদ্রিছ আলীর ভাষ্য, যেভাবে ইট-মাটি দিয়ে নদী ভরাট করা হচ্ছে, কয়েকদিন পর নদী অর্ধেক ভরাট হয়ে যাবে। ২-৩ কানি (বিঘা) জায়গা ভরাট।
এমএইচকে ব্রিকওয়ার্কসের ব্যবস্থাপক মোতালিব হোসেন অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে এই ভাটায় কাজ করছি। অনেক আগে থেকেই নদীর ধারে পুরনো ইট ফেলা হচ্ছে, ইট তৈরির মাটিও রাখা হচ্ছে নদীর পাড়ে। জায়গার অভাবে নদীর পাড়ে মাটি ও পুরনো ইট বসাতে হচ্ছে।
এমএইচকে ইটভাটার মালিক হুমায়ুন কবির জানান, নদী দখলের অভিযোগে ইউএনও তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। এটা তার নিজের জমি, তাই ইট-কাদা লাগাচ্ছেন।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, ইট ছুড়ে নদী ভরাট করা হচ্ছে কিনা জানি না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আতিকুর রহমান জানান, কয়েকদিন আগে ইটভাটার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হয়েছিল নদী ভরাট হয়ে গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নায়েবকে পাঠানো হবে। নদী ভরাট বন্ধ করতে তাকে নিষেধ করা হবে।