সাতক্ষীরায় ২২৫ কোটি টাকার আমের বাজার

0

এ বছর সাতক্ষীরার বড় বাজারে প্রতিদিন যে পরিমাণ আম আসছে আগের বছরগুলোতে তা দেখা যায়নি। রেকর্ড পরিমাণ ফল বাজারে আসছে; দামও কম। গত বছর আম বিক্রি হয়েছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, এ বছর ৪০ থেকে ৫০ টাকা। প্রতিদিন ৩০-৪০ ট্রাক আম জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন বাজারে যাচ্ছে। কথাগুলো বলছিলেন বড় বাজারের ব্যবসায়ী আবদুর রহিম।

সাতক্ষীরার আম দেশ-বিদেশের সীমানা ছাড়িয়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। আট বছর ধরে এই আম পৌঁছে যাচ্ছে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে। মাটির গুণাগুণ ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ জেলায় উৎপাদিত আম খুবই সুস্বাদু। স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটি ভোক্তাদের কাছে সুনাম কুড়িয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে থোকায় থোকায় আম উঠেছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ টন। প্রতিদিন ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে এ ফল। জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর সাতক্ষীরায় যে পরিমাণ আম উৎপাদিত হয়েছে, তা সঠিকভাবে বাজারজাত করা গেলে ২২৫ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে।

সদরের কমলনগর গ্রামের কৃষক আজিয়ার রহমান জানান, এ বছর আমের মুকুল বেশি হওয়ায় এবং আবহাওয়া ভালো থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ফলন হয়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে পাঠানো যায়।

এ জেলা থেকে এ বছর নবমবারের মতো ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আম যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই, গোপালখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ৫ মে সংগ্রহ করা হয়। এবং ২৫ মে হিমসাগর, ১ জুন ল্যাংড়া এবং ১৫ জুন আম্রপালি সংগ্রহের জন্য নির্ধারিত রয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৩ হাজার ১০০ কৃষক আম চাষ করেছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৫ হেক্টর, তালায় ৭১৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩৭০ হেক্টর, কালীগঞ্জে ৮৩৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ১৪৫ হেক্টর ও শ্রামনগরে ১৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।

সুলতানপুর বিগ বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমের আকার ও দামের তারতম্য রয়েছে। সুন্দর ও বড় আম বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকায়। এছাড়া মাঝারি আকারের ১৮০০ থেকে ২০০০, ১৪০০ থেকে ১৬০০ এবং ছোট আকারের আম বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকায়।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, এবার আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলা থেকে বিদেশে আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ টন। নির্ধারিত সময়ে আম সংগ্রহ করা গেলে বিদেশে সুনাম ধরে রাখা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *