গাজীপুর সিটি নির্বাচন। দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট, প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন

0

দরজায় কড়া নাড়ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। দিন গণনা শুরু হয়েছে। ভোটের আর মাত্র ৯ দিন বাকি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারণায় উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে গোটা মহানগর। নির্বাচনে মর্যাদার লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মহানগরের গ্রাম পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিজয়ের জন্য দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন। একই সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরছে আওয়ামী লীগ।

মহানগরের বাইরে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ইতোমধ্যে ১৪১টি দল গঠন করা হয়েছে। সবুজ দলগুলোর প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন। ওই কমিটিতে সদস্য রয়েছে প্রায় দুই হাজার। তারা সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এরই মধ্যে রোববার রাতে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ। কমিটিতে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র ৯ নেতাকে উপদেষ্টা এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির ১০২ সদস্য রাখা হয়েছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ। সাবেক সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে হারাতে বদ্ধপরিকর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ নির্বাচনের ফলাফল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো না কোনোভাবে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

আজমত উল্লা খান গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চাষ করছেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা জায়েদা খাতুনও থেমে থাকেননি। জায়েদা খাতুনের টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জনগণের কাছে ভোট চেয়ে ঘরে ঘরে যাচ্ছেন, জাহাঙ্গীরের নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলছেন।

আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা বলছেন, জায়েদা খাতুন জীবনে কখনো রাজনীতির মাঠে নামেননি। কখনো কোন সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নয়। তার পরিচয় জাহাঙ্গীরের মা। এই যুগে কেউ ভোট দিতে পারবে না। তবে জাহাঙ্গীর জানান, জায়েদা খাতুন তার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। গণযোগাযোগে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলেও দাবি করেন জাহাঙ্গীর।

পুরো সিটি করপোরেশন এলাকা এখন শুধু নৌকার পোস্টার আর টেবিল ঘড়িতে ভরে গেছে। তবে মাঝে মাঝে লাঙ্গল, হাতি বা মাছের পোস্টারও দেখা যায়। বিদ্যুতের খুঁটি, গাছের ডাল কোথাও পোস্টারমুক্ত নয়। মেয়রের পাশাপাশি কাউন্সিলরদের পোস্টার সর্বত্র।

২৫ মে নির্বাচনের প্রচারণা ২৩ মে মধ্যরাতে শেষ হবে। গাজীপুরে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। পরিবেশও বেশ শান্ত। বিষয়টি স্বীকার করেছেন সিটিজেন ফর গুড গভর্নেন্স (সুজন) গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার শিশিরও। এদিকে এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে গাজীপুর সিটির নাগরিকদের আশ্বস্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

বিএনপির মৌন সমর্থন দাবি করা সরকার শাহনূর ইসলাম রনিও প্রচারণা চালাচ্ছেন। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতি প্রতীকে ভোট চাইছেন তিনি। থেমে থাকেননি লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন। সোমবার দিনের শুরুতে তিনি ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি ভোক্তা নয়, রক্ষক হবেন এবং নাগরিক সেবা জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *