টিকিট দেখিয়ে রেলস্টেশনে প্রবেশ করতে হচ্ছে।ঈদের সময় বাসে সাধারণ ভিড়
আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের ছুটি। ওই দিন থেকে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই শহর ছাড়বে মানুষ। তবে ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। এ বছর ট্রেনে ভিড় নেই। কারণ, টিকিট দেখিয়ে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে প্রবেশ করতে হবে। টিকিটবিহীন যাত্রীদের জন্য ট্রেন ভ্রমণ কঠিন হয়ে পড়েছে কারণ স্টেশনের প্রবেশদ্বার থেকে ট্রেনে চড়া পর্যন্ত তিনটি স্তরের চেক রয়েছে৷ বাসে এখনও যথারীতি ভিড়।
গতকাল দুপুরে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের বেড়া দিয়ে বাইরে তল্লাশি চলছে। টিকিটের নামের বিপরীতে যাত্রীর পরিচয়পত্র চেক করা হয়। মিল না থাকলে যাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয় না। স্টেশনের বাইরে বাঁশের বেড়ায় রেলওয়ের পাঁচজন মোবাইল টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) যাত্রীদের টিকিট ও পরিচয়পত্র যাচাই করে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্যরাও সেখানে রয়েছেন।
কমলাপুর টিকিট কাউন্টারের সামনের তিনটি গেটে দ্বিতীয় দফা স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয় যাত্রীদের। সেখানে পয়েন্ট অফ সেলস (পিওএস) মেশিন চেক করে টিকিট আসল নাকি নকল। তবে সব যাত্রী নয়; কিছু টিকিট চেক করা হচ্ছে। যাত্রী প্রতি ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড সময় লাগে। কোনো কোনো যাত্রীর অভিযোগ, অকারণে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। টিকিট পরীক্ষকরা বলছেন, ৯৫ শতাংশ যাত্রীর টিকিট আইডি কার্ডের নামের সঙ্গে মিলেছে। যাদের নাম মিলছে না তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
গতকাল সকাল ৬টায় ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ধূমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ট্রেনটি ২০ মিনিট দেরিতে স্টেশন ছেড়েছে। বাকি দিনের জন্য, অন্যান্য ট্রেনগুলি মোটামুটি সময়সূচি অনুযায়ী ছেড়েছে। কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সরোয়ার জানান, সিডিউল অনুযায়ী ট্রেন চলছে। ট্রেনের মোট আসনের ২৫ শতাংশকে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হয়। অর্থাৎ, একটি ট্রেনে ৫০০ আসন থাকলে ১২৫ জন দাঁড়িয়ে ভ্রমণের জন্য টিকিট কিনতে পারবেন। ট্রেন ভ্রমণের দিন স্ট্যান্ডিং টিকেট দেওয়া হয়। গতকাল সকাল থেকেই কমলাপুর স্টেশনে স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য অনেকে আসেন। কিন্তু সেই টিকিটও দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। দীর্ঘ যাত্রার জন্য নয়, আশেপাশের জেলার যাত্রীরা এই টিকিট নিচ্ছেন। রিয়াজুল হাসান নামের এক যাত্রী জানান, দুপুর ২টায় তিনি মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে গফরগাঁও যেতে চান। কিন্তু স্ট্যান্ডিং টিকেট পাননি।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) সরদার শাহাদাত আলী জানান, স্ট্যান্ডিং টিকিটধারী যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। তারা শোভন বা শোভন চেয়ার ক্লাস কম্পার্টমেন্টে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারে। কেউ ছাদে উঠতে পারবে না। শুধু কমলাপুর নয়, পথেও ট্রেনের ছাদে কেউ যাতে চড়তে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বাসে যাত্রীর চাপ বাড়লে ঈদে ভ্রমণে যে ভিড় তৈরি হয় তা এখনো হয়নি। হানিফ পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এ বছর যাত্রী কম। অগ্রিম টিকিট ভালো বিক্রি হয়নি। তবে আগামীকাল ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর থেকে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।