গরমে অস্থির জনজীবন, বাড়তে পারে গরম

0

বৈশাখের আগে তীব্র তাপপ্রবাহে অস্থির হয়ে উঠেছে জনজীবন। কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্য মাথার উপরে এমন শক্তি প্রদর্শন করে যে কেবল মানুষ নয়, বন্যপ্রাণীও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ায় বৃদ্ধ ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এক সপ্তাহ আগে দেশের পাঁচ জেলায় শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ এখন দেশের প্রায় সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ছিল বছরের উষ্ণতম দিন। এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস জানায়, শিগগিরই স্বস্তির কোনো সুখবর নেই, উল্টো আরও কয়েকদিন এ অবস্থা চলতে পারে। আবহাওয়াবিদরা আরও বলছেন, আগামী কয়েকদিন তাপ ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে।

মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও নেত্রকোনা জেলাসহ রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে; যা আরও সাত দিন অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে বিক্ষিপ্তভাবে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, চলমান তাপপ্রবাহ সম্পর্কে আমরা সতর্কবার্তা দিয়েছি। বর্তমান তাপপ্রবাহকে আমরা মৃদু থেকে মাঝারি বলে থাকি। কিন্তু তাপমাত্রা ৪০-৪২ ডিগ্রী পর্যন্ত চলে গেলে তা তীব্র তাপপ্রবাহ হিসাবে চিহ্নিত হবে। তাই সতর্কতা।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বিভিন্ন দেশের আবহাওয়ার মডেল পর্যবেক্ষণ করে বলেন, ২১ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। ২২ এপ্রিল থেকে কমবে। চলমান তাপপ্রবাহের প্রভাব রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে তুলনামূলকভাবে কম থাকবে। এ সময় সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। ২৩ এপ্রিলের আগে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ ছাড়া দেশের অন্য জেলায় বৃষ্টি বা বর্ষার কোনো সম্ভাবনা নেই। ২১ এপ্রিল রাতে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টি হতে পারে। ২৪ এপ্রিল থেকে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে। ফলে ২৫ এপ্রিলের পর সিলেটের হাওড় এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া কালবৈশাখীর কারণে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ২৬ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে এমন বৈরী আবহাওয়া ফসলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, তাপপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের ক্ষেত রোদে শুকিয়ে শুকিয়ে গেছে। সেচের পানির সংকট রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই সময়ে কৃষি ও ফসল রক্ষার জন্য বেশ কিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *