যৌথ ঘোষনাপত্র তৈরিতে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের কমিটি

0

সরকার সরাতে বিএনপি ও সাত দলীয় জোট একযোগে আন্দোলন জোরদার করবে। জোটের পক্ষ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

বিএনপির ২৭ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কারের রূপরেখা, ১০ দফা সরকার পতন এবং ১৪ দফা গণতন্ত্রের প্লাটফর্ম ইশতেহার হিসেবে তৈরি করা হবে। উভয় শিবিরের তিনজন নেতাকে এ জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির আগে এটি চূড়ান্ত করে একটি মঞ্চ থেকে প্রকাশ করা হবে।

বৈঠকে নেতারা সরকারের পতনের রোডম্যাপ, গতিপ্রকৃতি ও আন্দোলনের গতি নিয়ে আলোচনা করেন। চলমান যৌথ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে যেতে দুই পক্ষের নেতারা একমত হয়েছেন। আগামী অক্টোবরের আগে আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ ও সাফল্য দিতে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে অবস্থান নিতেও সম্মত হয়েছেন তারা। একই সঙ্গে তাদের আন্দোলনকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সমর্থন পেতে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়।

অন্যদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও জোনায়েদ সাকি ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুমকে ইশতেহার তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ডেমোক্রেসি ফোরামের ঘোষিত ১৪ দফা কমিয়ে ৭ দফা করা হয়েছে। এ দফার সঙ্গে সমন্বয় করে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিন্ন ঘোষণা দেওয়া হবে। এ ছাড়া একযোগে কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৪ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সদর দফতরে বিক্ষোভ সমাবেশের সফলতা নিয়ে আলোচনা হয়। নতুন কর্মসূচি ঠিক করতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি আবার বৈঠক হবে।

বৈঠকে নব্বই দশকের গণআন্দোলনের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে রাজপথে ছাত্র-যুবকদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারী মাসে ঢাকায় রোডমার্চ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে সরকার নানা কৌশল করছে। এ জন্য গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার আগে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মূলত, গণতন্ত্র মঞ্চের সদস্য গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূরের বক্তব্যকে ঘিরে বৈঠকে আলোচনার সৃষ্টি হলে বিএনপি মহাসচিব ওই বক্তব্য দেন।

বৈঠকে একাধিক নেতা বলেন, কয়েকজন নেতার বক্তব্যে আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এসব বিষয়ে আপনাকে আরও দায়িত্বশীল ও কৌশলী হতে হবে। কারণ সরকার বিভিন্নভাবে আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

বৈঠক শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের বলেন, যুগপৎ আন্দোলনকে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে আমরা কাজ করছি। খুব শিগগিরই এ কাজে সফল হব। এ কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে বিজয়ের স্থানে পৌঁছাতে চান। এ আন্দোলনে বিভিন্ন ছাত্র, নারী ও যুব সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে গণতন্ত্র ফোরামের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ভাসানী আনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও জনগণের অধিকারের হাসনাত কাইয়ুম। এসময় পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও অংশ নেন দলের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *